রোমান
সম্রাট অগাস্টাসের রাজত্বকালে প্রাচীন ট্রয় নগরীর ধ্বংসস্তুপের উপর
ইলিয়াম নামে নতুন একটি শহর নির্মিত হয়। কনস্টান্টিনোপল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার
পূর্ব পর্যন্ত ইলিয়াম বিকশিত হয়েছে, কিন্তু বাইজান্টাইন রাজত্বের সময়
ধীরে ধীরে এর পতন হতে থাকে।
১৮৭০ সালে জার্মান প্রত্নতত্ত্ববিদ হাইনরিশ শ্লিমান এই এলাকায় খনন কাজ শুরু করেন। এই খনন চলতে থাকায় এক সময় প্রমাণিত হয় যে, এখানে একের পর এক বেশ কয়েকটি শহর নির্মিত হয়েছিল। সম্ভবত এই শহরগুলোরই একটি হোমারের ট্রয় (ট্রয় ৭)। অবশ্য এ নিয়ে সন্দেহ আছে। কিন্তু এটা প্রায় নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে, হিত্তীয় রচনায় উল্লেখিত উইলুসা শহরটি এখানেই অবস্থিত ছিল। অনেকে মনে করেন ইলিয়ন এই উইলুসা নামেরই গ্রিক সংস্করণ। ট্রয়ের রাজা প্রায়াম এবং রানী হেকুবার দ্বিতীয় সন্তান এই প্যারিস। দ্বিতীয় পুত্রের জন্মের অল্পক্ষণে হেকুবা স্বপ্নে দেখে, সে পৃথিবীতে একটি জ্বলন্ত অগি্নশিখা আনতে যাচ্ছে, যে শিখা জ্বালিয়ে দেবে ট্রয় নগরী। সম্ভাব্য দুর্ভাগ্য তাদের পীড়িত করে, কিন্তু শিশুটিকে হত্যা করতে কুণ্ঠিত হয়। রাজা প্রায়াম শিশুটিকে আইডা পর্বতে রেখে আসে। এক রাখাল তাকে কুড়িয়ে নেয়, নিজ সন্তানের মতো লালন করে; আকর্ষণীয় ও সুদর্শন এই বালকের নাম রাখে প্যারিস।
পুরাণে আছে, প্যারিস যখন টগবগে যুবক, মার্মিডনসের রাজা পেলেউস ও সমুদ্রদেবী থেটিসের বিয়েতে যুদ্ধদেবী এরিস ছাড়া সবাই আমন্ত্রিত হয়। দেবতাদের পিতা জিউস, তার স্ত্রী হেরা, জ্ঞানদেবী অ্যাথিনা প্রেম ও সৌন্দর্যের দেবী আফ্রোদিতি বিয়েতে উপস্থিত। মূলত একটি সংকট সৃষ্টি করার জন্যই যুদ্ধদেবী এরিস একটি সোনালি আপেল ভোজের টেবিলে নিক্ষেপ করল; আপেলের গায়ে উৎকলিত ‘সুন্দরতম রমণীর জন্য’। আপেলের দাবি তিনজনেরই_ হেরা, অ্যাথিনা ও আফ্রোদিতি সৌন্দর্যে শ্রেষ্ঠত্বের গৌরব কেউ ছাড়তে সম্মত নয়। তাদের কলহ মেটাতে পিতা জিউস বার্তাদূত আইরিসকে বললেন, আপেলটি আইডা পর্বতের রাখাল প্যারিসকে দিতে। তার বিবেচনায় যে সুন্দরী শ্রেষ্ঠা, তাকেই যেন আপেলটি হস্তান্তর করে।
প্যারিস তখন মেষ চড়াচ্ছিলো। তিন দেবী আবির্ভূত হলেন। হেরা বলল, ‘আমি তোমাকে সবচেয়ে ধনী এবং সবচেয়ে ক্ষমতাশালী রাজা বানিয়ে দেব।’ অ্যাথিনা বলল, ‘আমি তোমাকে সবচেয়ে জ্ঞানী ও সবচেয়ে খ্যাতিমান মানুষে পরিণত করব।’ মিষ্টি হেসে আফ্রোদিতি বলল, ‘আমি তোমাকে দেব পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরী নারী, যে তোমার স্ত্রী হবে।’ সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধা করেনি প্যারিস; তার চাই সুন্দরী রমণী। আপেল পেল আফ্রোদিতি। সন্তুষ্ট দেবী আফ্রোদিতি তার জন্য বরাদ্দ করল হেলেনকে আর ক্ষুব্ধ দেবী হেরা দিল সংকট।
দেবী হেরার কাছে নিজ পরিচয় পেয়ে প্যারিস পিতা প্রায়াম ও মাতা হেকুবার কাছে ফিরে গেল এবং রাজপুত্র হিসেবেই আবির্ভূত হলো। আফ্রোদিতি-প্রতিশ্রুত সুন্দরীর সন্ধানে প্যারিস সাগর পাড়ি দেবে। বোন ক্যাসান্ড্রা তাকে সতর্ক করল এবং অনুনয় করে বলল, এ যাত্রা ট্রোজানদের জন্য দুঃখ বয়ে আনবে।
১২৩০ সালের দিকে ট্রয়ের রাজপুত্র প্যারিস ও হেক্টর আসেন স্পার্টায় ব্যবসা-বাণিজ্য সংক্রান্ত চুক্তি সম্পন্ন করার জন্য। স্পার্টার রাজা মেনেলাউস প্যারিস ও হেক্টরকে সাদরে সম্ভাষন জানান। তাদের আগমনে রাজ্যকে লাল-নীল বাতিতে চমৎকারভাবে সাজানো হয়। নৈশভোজের বিপুল সমারোহের পর প্যারিস ও হেক্টরকে সবার সঙ্গেই পরিচয় করিয়ে দেন রাজা মেনেলাউস। প্রাসাদেই রাজপুত্র প্যারিসের দেখা হয় হেলেনের সঙ্গে। তার শরীরী রসায়নই তখন বলে দিল, এই সেই রমণী, মর্ত্যের সবচেয়ে সুন্দর সৃষ্টি, তাকে দেওয়া আফ্রোদিতির সেই প্রতিশ্রুত উপহার। প্যারিস ও হেলেনের প্রণয় ঘটে।
গোপনে গ্রীস ছেড়ে ট্রোজান জাহাজে করে এজিয়ানের নীল সমুদ্র পাড়ি দেন হেলেন আর প্যারিস।
চলে আসেন নগর সভ্যতার অনন্য উদাহরন, সাজানো সুন্দর ট্রয়ে। স্পার্টার রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ে প্যারিস হেলেনকে অপহরণ করে ট্রয়ে নিয়ে গেছে।
হেলেনকে উদ্ধার এবং গ্রীসের সম্মান রক্ষার্থে প্রায় ১ হাজার জাহাজ নিয়ে ট্রয়ের উদ্দেশে রওনা দেয় গ্রিস-যোদ্ধারা। জাহাজ থেকে সর্বপ্রথম নেমে আসেন প্রসিদ্ধ গ্রিকবীর একলিস। নেমেই যুদ্ধ শুরু করেন একলিস ও তার সঙ্গীরা। প্রথম যুদ্ধেই ট্রয়নগরীর বন্দর দখল করেন নেয় গ্রিকরা। এভাবে টানা প্রায় ১০ বছর বন্দর ও রাজ্য অবরোধ করে রাখে গ্রিকরা। বিভিন্ন সময়ে যুদ্ধে নিহত হয় একলিসের ভাই উইরোরাস, প্যারিসের বড় ভাই ট্রয়বীর হেক্টর ও নাম না জানা উভয়পক্ষের হাজারও যোদ্ধা।
যুদ্ধে সহজে জয়লাভ না করতে পেরে গ্রিকরা আশ্রয় নেয় প্রতারণার । জন্ম নেয় ইতিহাসের এক জঘন্যতম প্রতারণার প্রতীক ট্রোজান হর্স।
১৮৭০ সালে জার্মান প্রত্নতত্ত্ববিদ হাইনরিশ শ্লিমান এই এলাকায় খনন কাজ শুরু করেন। এই খনন চলতে থাকায় এক সময় প্রমাণিত হয় যে, এখানে একের পর এক বেশ কয়েকটি শহর নির্মিত হয়েছিল। সম্ভবত এই শহরগুলোরই একটি হোমারের ট্রয় (ট্রয় ৭)। অবশ্য এ নিয়ে সন্দেহ আছে। কিন্তু এটা প্রায় নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে, হিত্তীয় রচনায় উল্লেখিত উইলুসা শহরটি এখানেই অবস্থিত ছিল। অনেকে মনে করেন ইলিয়ন এই উইলুসা নামেরই গ্রিক সংস্করণ। ট্রয়ের রাজা প্রায়াম এবং রানী হেকুবার দ্বিতীয় সন্তান এই প্যারিস। দ্বিতীয় পুত্রের জন্মের অল্পক্ষণে হেকুবা স্বপ্নে দেখে, সে পৃথিবীতে একটি জ্বলন্ত অগি্নশিখা আনতে যাচ্ছে, যে শিখা জ্বালিয়ে দেবে ট্রয় নগরী। সম্ভাব্য দুর্ভাগ্য তাদের পীড়িত করে, কিন্তু শিশুটিকে হত্যা করতে কুণ্ঠিত হয়। রাজা প্রায়াম শিশুটিকে আইডা পর্বতে রেখে আসে। এক রাখাল তাকে কুড়িয়ে নেয়, নিজ সন্তানের মতো লালন করে; আকর্ষণীয় ও সুদর্শন এই বালকের নাম রাখে প্যারিস।
পুরাণে আছে, প্যারিস যখন টগবগে যুবক, মার্মিডনসের রাজা পেলেউস ও সমুদ্রদেবী থেটিসের বিয়েতে যুদ্ধদেবী এরিস ছাড়া সবাই আমন্ত্রিত হয়। দেবতাদের পিতা জিউস, তার স্ত্রী হেরা, জ্ঞানদেবী অ্যাথিনা প্রেম ও সৌন্দর্যের দেবী আফ্রোদিতি বিয়েতে উপস্থিত। মূলত একটি সংকট সৃষ্টি করার জন্যই যুদ্ধদেবী এরিস একটি সোনালি আপেল ভোজের টেবিলে নিক্ষেপ করল; আপেলের গায়ে উৎকলিত ‘সুন্দরতম রমণীর জন্য’। আপেলের দাবি তিনজনেরই_ হেরা, অ্যাথিনা ও আফ্রোদিতি সৌন্দর্যে শ্রেষ্ঠত্বের গৌরব কেউ ছাড়তে সম্মত নয়। তাদের কলহ মেটাতে পিতা জিউস বার্তাদূত আইরিসকে বললেন, আপেলটি আইডা পর্বতের রাখাল প্যারিসকে দিতে। তার বিবেচনায় যে সুন্দরী শ্রেষ্ঠা, তাকেই যেন আপেলটি হস্তান্তর করে।
প্যারিস তখন মেষ চড়াচ্ছিলো। তিন দেবী আবির্ভূত হলেন। হেরা বলল, ‘আমি তোমাকে সবচেয়ে ধনী এবং সবচেয়ে ক্ষমতাশালী রাজা বানিয়ে দেব।’ অ্যাথিনা বলল, ‘আমি তোমাকে সবচেয়ে জ্ঞানী ও সবচেয়ে খ্যাতিমান মানুষে পরিণত করব।’ মিষ্টি হেসে আফ্রোদিতি বলল, ‘আমি তোমাকে দেব পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরী নারী, যে তোমার স্ত্রী হবে।’ সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধা করেনি প্যারিস; তার চাই সুন্দরী রমণী। আপেল পেল আফ্রোদিতি। সন্তুষ্ট দেবী আফ্রোদিতি তার জন্য বরাদ্দ করল হেলেনকে আর ক্ষুব্ধ দেবী হেরা দিল সংকট।
দেবী হেরার কাছে নিজ পরিচয় পেয়ে প্যারিস পিতা প্রায়াম ও মাতা হেকুবার কাছে ফিরে গেল এবং রাজপুত্র হিসেবেই আবির্ভূত হলো। আফ্রোদিতি-প্রতিশ্রুত সুন্দরীর সন্ধানে প্যারিস সাগর পাড়ি দেবে। বোন ক্যাসান্ড্রা তাকে সতর্ক করল এবং অনুনয় করে বলল, এ যাত্রা ট্রোজানদের জন্য দুঃখ বয়ে আনবে।
১২৩০ সালের দিকে ট্রয়ের রাজপুত্র প্যারিস ও হেক্টর আসেন স্পার্টায় ব্যবসা-বাণিজ্য সংক্রান্ত চুক্তি সম্পন্ন করার জন্য। স্পার্টার রাজা মেনেলাউস প্যারিস ও হেক্টরকে সাদরে সম্ভাষন জানান। তাদের আগমনে রাজ্যকে লাল-নীল বাতিতে চমৎকারভাবে সাজানো হয়। নৈশভোজের বিপুল সমারোহের পর প্যারিস ও হেক্টরকে সবার সঙ্গেই পরিচয় করিয়ে দেন রাজা মেনেলাউস। প্রাসাদেই রাজপুত্র প্যারিসের দেখা হয় হেলেনের সঙ্গে। তার শরীরী রসায়নই তখন বলে দিল, এই সেই রমণী, মর্ত্যের সবচেয়ে সুন্দর সৃষ্টি, তাকে দেওয়া আফ্রোদিতির সেই প্রতিশ্রুত উপহার। প্যারিস ও হেলেনের প্রণয় ঘটে।
গোপনে গ্রীস ছেড়ে ট্রোজান জাহাজে করে এজিয়ানের নীল সমুদ্র পাড়ি দেন হেলেন আর প্যারিস।
চলে আসেন নগর সভ্যতার অনন্য উদাহরন, সাজানো সুন্দর ট্রয়ে। স্পার্টার রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ে প্যারিস হেলেনকে অপহরণ করে ট্রয়ে নিয়ে গেছে।
হেলেনকে উদ্ধার এবং গ্রীসের সম্মান রক্ষার্থে প্রায় ১ হাজার জাহাজ নিয়ে ট্রয়ের উদ্দেশে রওনা দেয় গ্রিস-যোদ্ধারা। জাহাজ থেকে সর্বপ্রথম নেমে আসেন প্রসিদ্ধ গ্রিকবীর একলিস। নেমেই যুদ্ধ শুরু করেন একলিস ও তার সঙ্গীরা। প্রথম যুদ্ধেই ট্রয়নগরীর বন্দর দখল করেন নেয় গ্রিকরা। এভাবে টানা প্রায় ১০ বছর বন্দর ও রাজ্য অবরোধ করে রাখে গ্রিকরা। বিভিন্ন সময়ে যুদ্ধে নিহত হয় একলিসের ভাই উইরোরাস, প্যারিসের বড় ভাই ট্রয়বীর হেক্টর ও নাম না জানা উভয়পক্ষের হাজারও যোদ্ধা।
যুদ্ধে সহজে জয়লাভ না করতে পেরে গ্রিকরা আশ্রয় নেয় প্রতারণার । জন্ম নেয় ইতিহাসের এক জঘন্যতম প্রতারণার প্রতীক ট্রোজান হর্স।